শহীদ মিনারের পেছনে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হত্যা

আরফিন মুহিন | ঢাকা

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদির পেছন থেকে মীম (১৫) নামের এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে পুলিশ মীমকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ধারণা করছে, কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তাকে হত্যা করেছে দৃর্বত্তরা।

রবিবার সকালে এ বিষয়ে রমনা বিভাগের ডিসি মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, রাতে শহীদ মিনারের পেছনে ৩ জন মেয়ে একটি ছেলেকে মারধর করছে বলে সংবাদ পাই। ঘটনাস্থল থেকে ৩ মেয়ে ও ছেলেটিকে আটক করা হয়েছে। এ সময় শহীদ মিনারের পেছন থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা। বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী ইনচার্জ (এএসআই) আব্দুল খান জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরে জানা যাবে এটা আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড।

নিহতের বান্ধবী নাসিমা ঢামেকে এসে মরদেহ শনাক্ত করে জানায়, মীমের বাবা আলী রিকশাচালক ও মা লুমা ওরফে সুন্দরী বেগম। তারা থাকেন কামরাঙ্গীরচর ঝাউচরে বাজারের পাশে। অনেক বছর ধরে তারা শহীদ মিনার এলাকায় একসঙ্গে ফুল বিক্রি করতো। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মীম বড় ছিল।

নাসিমা আরো জানায়, গতরাত (শনিবার) ১২টা পর্যন্ত তিনসহ মীম, হ্যাপি, পুতুল ও লতা একসঙ্গে শহীদ মিনার এলাকায় ঘোরাঘুরি করে। এরপর নাসিমা বাসায় চলে গেলেও তারা ৪ জন শহীদ মিনার এলাকায় ছিল। সকালে মীমের মৃত্যুর খবর শুনতে পায়।
শাহবাগ থানার ওসি মামুন অর রশিদ বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় অনেক ভবঘুরে বিরাজ করে। মেয়েটিও সম্ভবত ভবঘুরে। তার মরদেহের আলামত দেখে ধারণা করছি তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা করতে না পেরে মেয়েটিকে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়।

এদিকে, এই ঘটনায় মৃত কিশোরীর মা রুমা বেগম বাদি হয়ে শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। কিশোরীকে ধর্ষণের পরে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার আবুল খায়ের নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হলে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া এ রিমান্ডের আদেশ দেন।